জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন হলে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা কমে যাবে এবং এতে সরকারের ভারসাম্য নষ্ট হবে বলে মনে করে বিএনপি। আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের মূলতবি শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতিকে প্রধান করে নয় সদস্যবিশিষ্ট একটি সাংবিধানিক কাউন্সিলের প্রস্তাব করেছে কমিশন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী, উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, প্রধান বিচারপতি, বিরোধীদল কর্তৃক ডেপুটি স্পিকার নিয়ে এনসিসি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা এ ধারণার সঙ্গে একমত না। কারণ, এনসিসিকে সাংবিধানিকভাবে অনেক ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।এনসিসির জবাবদিহি নেই দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, যদি অথরিটি থাকে, পাওয়ার ফাংশন থাকে, কিন্তু অ্যাকাউন্ট্যাবিলিটি থাকে না, সেই রকম কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমরা গণতান্ত্রিক পার্টি হিসেবে সমর্থন জানাতে পারি না। এই ফাংশনগুলা আলাদা করে আরেকটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করার মধ্য দিয়ে একটা ইমব্যালেন্স সৃষ্ট করা হবে। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, রাষ্ট্রের মধ্যে একটি ভারসাম্যমূলক রাষ্ট্রকাঠামো, সমাজব্যবস্থা, রাষ্ট্র পরিচালনা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেটা করার জন্য কী করতে পারি, সেটা আমাদের চিন্তা করা উচিত। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা থাকলে অতীতের নির্বাচনগুলা এভাবে হতো না। হয়তো কিছুটা আপত্তি থাকত, কিছু ভুলত্রুটি হতো। তাহলে আমাদের কেয়ারটেকার সরকারকে পূর্ণপ্রতিষ্ঠা করতে হবে, অলরেডি হয়েছে। যদি আমরা নির্বাচন কমিশনকে প্রকৃতিভাবে, স্বাধীনভাবে, আইনিভাবে ফাংশন করতে দিই, তাহলে এই দুটা বিষয়ের মধ্য দিয়ে নির্বাহী বিভাগ ও সংসদের সম্পূর্ণভাবে স্বৈরাচার হওয়া চিরতরে বিদায় নেবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, শরীরকে অঙ্গহানি করে সমস্ত শরীরকে সচল রাখা যায় না। নির্বাহী বিভাগ দুর্বল করার মধ্য দিয়ে আরেকটি সবল কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে যাই যদি, সেটার এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারব না। আমরা যেটা পারব, সেটা হচ্ছে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা। এনসিসি নিয়ে পূর্ণমূল্যায়ন করবেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিকল্প কোনো প্রস্তাব যদি আসে, সেটা আমরা দলের মধ্যে আলোচনা করব। সেটা নিয়ে আমাদের আবার চিন্তা করতে হবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাবের আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের ‘রাষ্ট্রপতির’ জন্য কমিশনের প্রস্তাব হচ্ছে ইলেকট্ররিয়াল কলেজ করা হবে এবং প্রায় ৭০ হাজার ভোটার থাকবে। স্থানীয় সরকার পর্যায়ের সব নির্বাচিত প্রতিনিধি এখানে ভোটার হিসেবে থাকবেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা বলেছি, বিদ্যমান ব্যবস্থাতেই জাতীয় সংসদের সদস্যরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করবেন। সংসদে উভয়পক্ষের সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবে। পরে যদি জাতীয় সংসদে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে নতুন কোনো প্রস্তাব আসে বা জনগণ ও দেশের জন্য কল্যাণকর হবে, তখন দেখা যাবে।