• ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২১শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সাবেক সিইসি নুরুল হুদা চার দিনের রিমান্ডে

দৈনিক সোনালী সিলেট
প্রকাশিত জুন ২৩, ২০২৫
সাবেক সিইসি নুরুল হুদা চার দিনের রিমান্ডে

সোনালী ডেস্ক :

রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদাকে চার দিন রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার ২৩জুন  ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান রিমান্ডের এই আদেশ দেন।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুজ্জোহা সরকার সাবেক সিইসি কেএম নুরুল হুদাকে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন।

রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসামি নুরুল হুদা ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালে বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি উক্ত নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারেন নাই এবং দেশকে গভীর সংকটের মধ্যে নিমজ্জিত করেছেন। এছাড়া প্রশাসনকে একটি পক্ষে ব্যবহার করেছেন। যাতে করে তিনি সংবিধান অমান্য করেছেন এবং শপথ ঠিক রাখতে পারেন নাই। আসামি নুরুল হুদা দণ্ডবিধি আইনের ১৭১ (ক) ধারার সংজ্ঞা মতে নির্বাচনের ছদ্মবেশ ধারণ করে দিনের ভোট রাতে সম্পাদন করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানকে বাধ্য করে নির্বাচন সম্পন্ন করেছেন। সে নির্বাচন কমিশনের প্রধান ব্যক্তি ছিলেন। তিনি অন্যান্য কমিশনার এবং বিভাগীয় ও জেলা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সরকারি আদেশ, সাংবিধানিক ক্ষমতা হ্রাস, দেশের জনগণের ভোটাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। তরুণ সমাজকে ভোট বিমুখ ও নির্বাচনের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন।

এছাড়া কেএম নুরুল হুদা ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার থাকা অবস্থায় কার পরামর্শে ও সহযোগিতায় ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিতদের দ্বারা দিনের ভোট রাতে সম্পন্ন করে মিথ্যা বিবৃতির মাধ্যমে একটি দলকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন এবং মিথ্যা গেজেট প্রকাশ ও বাস্তবায়ন করেন। আসামি নুরুল হুদা প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি দলকে বিজয়ী ঘোষণা করার লক্ষ্যে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে প্রহসনমূলক নির্বাচন ব্যবস্থা গ্রহণ করে কত টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছে তা উদঘাটন করা প্রয়োজন। যাতে করে নতুন প্রজন্মের কোটি কোটি  ভোটার ভোট দিতে পারেননি। তাতে দেশে স্বৈরাচারীর বীজ বপন করা হয়েছিল।

রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও সংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও গ্রেপ্তারকৃত আসামি সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা কারো ইন্ধনে ও কী স্বার্থে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্পূর্ণভাবে জনগণকে তাদের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। আসামি নুরুল হুদা ফ্যাসিবাদের মূল নায়ক। তার কাছ থেকে পাতানো নির্বাচনের কৌশল ও এর সঙ্গে জড়িতদের পরিচয় উদঘাটন করা দরকার। আসামি নুরুল হুদা কোন কোন সংসদ আমলে কার কার কাছ হতে কত টাকা ঘুষ গ্রহণ করে ফলাফল পরিবর্তন করে গেজেটে সাজানো ভোটের ফলাফল প্রকাশ করেছেন তার তথ্য উদঘাটন করা দরকার। এছাড়া মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করার জন্য রিমান্ডে নিয়ে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

এর আগে গতকাল রোববার রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার নথি থেকে জানা গেছে, গত ২২ জুন সকালে শেরেবাংলা নগর থানায় দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনাকারী তিনজন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নুরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করে বিএনপি।

দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলায় সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ২৪ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়।